ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গ উত্থান সমস্যার ১০০% স্থায়ী সমাধান , Erectile Dysfunction

ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গ উত্থান সমস্যার ১০০% স্থায়ী সমাধান , Erectile Dysfunction

ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গ উত্থান জনিত সমস্যা যা পুরুষত্বহীনতা নামেও পরিচিত। বিভিন্ন সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী বর্তমান বিশ্বে এক তৃতীয়াংশ পুরুষের মধ্যে Erectile Dysfunction বা লিঙ্গ উত্থান জনিত সমস্যা দেখা যায়। রিপোর্টে  আরো দেখা গেছে যে ৪০ থেকে ৭০ বছর বয়সের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি পুরুষ ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা পুরুষত্বহীনতা জনিত সমস্যায় ভুগছেন। এটা নিয়ে অবশ্য কোনো টেনশন বা উদ্বেগের কিছু নেই। কারণ এটা সহজেই নিরাময়যোগ্য।

ইরেকটাইল ডিসফাংশন কীঃ

ইরেকটাইল ডিসফাংশন হচ্ছে পুরুষের লিঙ্গ উত্থান জনিত সমস্যা। অর্থাৎ যৌনমিলনের সময় যদি পুরুষের লিঙ্গ বা পেনিস যথেষ্ট পরিমাণে শক্ত না হয় যোনীপথে প্রবেশের জন্য তখন সেটাকে বলা হয় ইরেকটাইল ডিসফাংশন বা পুরুষের লিঙ্গের উত্থান জনিত সমস্যা। স্বামী স্ত্রীর দাম্পত্য জীবনে অত্যন্ত বেদনাদায়ক ইস্যু হচ্ছে পুরুষের লিঙ্গের উত্থান জনিত সমস্যা বা ইরেকটাইল ডিসফাংশন।

একটা সন্তোষজনক যৌনমিলনের পূর্বশর্ত হচ্ছে পুরুষের যথাযথ লিঙ্গ উত্থান। যৌনমিলনের পূর্বে পুরুষের লিঙ্গ ঠিকমতো উত্থান বা শক্ত না হলে একটা আনন্দময় যৌন উপভোগ কখনোই সম্ভব নয়।

পুরুষের লিঙ্গ উত্থান কিভাবে ঘটে থাকে ?

পুরুষের লিঙ্গ খাড়া হওয়ার পিছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা হচ্ছে মস্তিষ্কের। কেউ যখন যৌন উদ্দীপক কোনো কিছু কল্পনা করেন, কিছু দেখেন, যৌনতা বিষয়ক কোনো কিছু শুনেন কিংবা নারীকে স্পর্শ করেন তখন প্রথমেই তার ব্রেইন (মস্তিষ্ক) স্টিমুলেইটেড হয়। এরপর মস্তিষ্ক থেকে সিগন্যাল পাওয়ার সাথে সাথে পুরুষ তার দেহ-মনে যৌন উদ্দীপনা অনুভব করে থাকে। এরপর কিছু হরমোন এবং নার্ভের সম্মিলিত ক্রিয়ার মাধ্যমে পুরুষাঙ্গের ভিতরের রক্তনালীগুলো প্রসারিত হতে থাকে। এই পর্যায়ে লিঙ্গের ভিতর প্রচুর রক্ত প্রবাহিত হয় , ফলে লিঙ্গ শক্ত, মোটা ও খাড়া হয়ে পড়ে।

এক কথায়, পুরুষের লিঙ্গের উত্থান পুরোপুরিভাবে যৌন উদ্দীপনার সাথে সম্পৃক্ত। আর পুরুষের যৌন উদ্দীপনা সরাসরি তাদের মস্তিষ্ক, হরমোন, আবেগ, অনুভূতি, নার্ভ, পেশি ও রক্ত সংবহনতন্ত্রের সাথে সম্পর্কযুক্ত। 

ইরেকটাইল ডিসফাংশন এর লক্ষণ সমূহঃ

ইরেকটাইল ডিসফাংশন বা পুরুষের লিঙ্গ উত্থান ত্রুটির লক্ষণগুলো হলো-

  • লিঙ্গ শক্ত হয় না
  • লিঙ্গের উত্থান ঘটে না
  • লিঙ্গের উত্থান বেশিক্ষণ থাকে না
  • যৌন আকাঙ্ক্ষা কমে যায়
  • অতিদ্রুত বীর্যস্খলন ঘটে
  • টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমে যায়
  • অ্যানোরগাজমিয়া বা অর্গাজম না হওয়া
  • যৌন ভীতি বা আত্মবিশ্বাসহীনতা 

পুরুষের লিঙ্গ উত্থান ত্রুটি কখন রোগের পর্যায়ে পড়ে ?

আমরা ইরেকটাইল ডিসফাংশন এর সংজ্ঞায় জেনেছি একজন পুরুষ যখন সঙ্গিনীর সাথে শারীরিক মিলনের জন্য পরিপূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণ করে তখন যদি পুং লিঙ্গ প্রয়োজনমতো শক্ত বা খাড়া না হয়, তখন পুরুষের এই অবস্থাকে ইরেকটাইল ডিসফাংশন বা  লিঙ্গ উত্থান ত্রুটি বলা হয়ে থাকে। তবে এক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে এই ঘটনা যদি ৩ থেকে ৬ মাস ধরে প্রত্যেকবার সহবাসের সময় ঘটে থাকে, শুধুমাত্র তখনই এটাকে রোগ বলা যাবে। এবং তখনই এটাকে চিন্তার বিষয় বলে ধরে নিতে হবে।

ইরেকটাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গ উত্থান সমস্যার কারণঃ

ইরেকটাইল ডিসফাংশন বা পুরুষের লিঙ্গ উত্থান সমস্যা মূলত দুই রকমের কারণে হয়ে থাকে। একটাকে বলা হয় Psychological Cause বা মানসিক কারণ। অন্য আরেকটাকে বলা হয়  Organic Cause বা শারীরিক কারণ।

Psychological Cause বা মানসিক কারণঃ

আমাদের কাছে ইয়ং বয়সের যেসব রোগীরা এসে থাকেন, তাদের ৯৯% রোগীই মানসিক কারণে এই সমস্যায় আক্রান্ত। মানসিক কারণগুলি হচ্ছে- রোগীর মধ্যে বিভিন্ন রকমের মানসিক চাপ, প্রাত্যহিক জীবনে বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় জর্জরিত, মানসিক অশান্তি, ডিপ্রেশন, ঠিকমতো ঘুম হচ্ছে না , mental anxiety, হতাশা-অস্থিরতা, সংসারে অশান্তি, চাকরি-বাকরিতে ঝামেলা। আমাদের মেডিকেল সাইন্স বলে, সারাক্ষণ এরকম পরিস্থিতির মধ্যে থাকলে একজন পুরুষের লিঙ্গ উত্থান কখনই সম্ভব না।

আবার অনেককেই দেখা যায় যৌনকর্ম শুরু করার আগে এক ধরনের ভয় বা সংশয়ের মধ্যে থাকেন- ঠিকমতো পারফরমেন্স করতে পারব কিনা, ঐসময় লিঙ্গ শক্ত হবে কিনা, স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করতে পারব কি না। এটাকে বলা হয় Performance anxiety disorder

অনেকের ক্ষেত্রে আবার এমনও হয় অতীতে কোনো এক সময় হয়ত সঙ্গিনীকে Satisfy করতে পারেন নি। এবং সেই চিন্তা বা ভয় এখনও মাথায় রয়ে গেছে। পরবর্তীতে যখনই সে কারো সাথে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে যাচ্ছেন তার মাথায় কিন্তু সেই জিনিসটাই ঘুরছে যে আমি হয়ত এইবারও পারবো না। আমার লিঙ্গটা বুঝি শক্ত হবে না। ঠিক এইভাবেই সে তার মনটাকে Set up করে ফেলেছে। এর ফলে দেখা যায় লিঙ্গটা সত্যি সত্যি আর শক্ত হচ্ছে না। পারফরমেন্স এংজাইটি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আমরা পেশেন্টকে কিছু কাউন্সিলিং এবং এক্সারসাইজ দিয়ে থাকি। এতেই শতভাগ কাজ হয়ে যায়।

রোগীরা প্রথমবার যখন আমাদের চেম্বারে আসেন, একটা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে প্রথমেই তাদের অ্যাসেস করে নিই। মাত্র একটা প্রশ্নের উত্তরের মাধ্যমেই পরিষ্কার হয়ে যাই তার এ সমস্যাটা কি মানসিক কারণে হচ্ছে নাকি শারীরিক কারণে হচ্ছে। যে প্রশ্নটা আমরা করে থাকে সেটা হচ্ছে- রাতের বেলায় কখনও লিঙ্গ উত্থান হয় কিনা। যদি রাতের যেকোনো সময় লিঙ্গ খাড়া হয়, তাহলে বুঝতে হবে এটা তার শারীরিক সমস্যা নয়; মানসিক সমস্যা। আর যদি লিঙ্গ খাড়া একেবারেই না হয় তাহলে বুঝতে হবে তার শারীরিক কোনো  সমস্যা আছে যার জন্য লিঙ্গের উত্থান হচ্ছে না। 

Organic বা শারীরিক কারণঃ 

ইরেকটাইল ডিসফাংশন বা পুরুষের লিঙ্গ উত্থান জনিত সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার পেছনে যেসব শারীরিক কারণগুলো দায়ী সেগুলো হচ্ছে-

রক্ত প্রবাহঃ   পুরুষের লিঙ্গে পরিপূর্ণভাবে রক্ত সরবরাহ বা Blood Circulation না হলে লিঙ্গের উত্থান ঘটে না। 

হরমোনের ঘাটতিঃ   আমরা অনেকক্ষেত্রেই দেখি যে, পুরুষের ইরেকটাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গের উত্থান জনিত সমস্যাটা হরমোনাল কারণে হয়ে থাকে। টেস্টোস্টেরন নামক পুরুষের যে সেক্স হরমোনটা আছে সেটা ৪০ বছরের পর থেকে এক ইউনিট করে কমতে থাকে। তবে এই হরমোনটা যদি অনেক বেশি মাত্রায় কমে যায় সেক্ষেত্রে পুরুষের লিঙ্গের উত্থান সমস্যা বা ইরেকটাইল ডিসফাংশন দেখা দেয়। অন্যদিকে Prolactin হরমোনের পরিমান বেড়ে গেলেও পুরুষে লিঙ্গ উত্থান জনিত সমস্যা সৃষ্টি হয়।

ক্রনিক ডিজিসঃ   হার্ট, লাংস, কিডনী, লিভার এগুলো কোনো কোনো কারণে অসুস্থ হলে লিঙ্গ উত্থান বা ইরেকটাইল ডিসফাংশন এর মতো প্রবলেম দেখা দেয়। ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ জনিত কোনো সমস্যা কিংবা রক্তনালীর যে কোনো ধরনের সমস্যা থেকে কিন্তু আপনার ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গ উত্থান সমস্যা হতে পারে।

মেডিসিনঃ   ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের ঔষধ, প্রেশারের বিভিন্ন ঔষধ কিংবা অ্যালার্জির ঔষধ দীর্ঘদিন যাবৎ সেবন করলে ইরেকটাইল ডিসফাংশন বা পুরুষের লিঙ্গ উত্থান জনিত সমস্যা হতে পারে। এমনকি হার্ট, লাংজ, কিডনী এই অর্গানগুলোর যে রোগগুলো আছে সেগুলোর মেডিসিনগুলো কিন্তু ইরেক্টাইল ডিসফাংশন হওয়ার আরেকটা কারণ।

আঘাতঃ   কারো স্পাইনাল কর্ডে ইনজুরি হলে ইরেকটাইল ডিসফাংশন বা পুরুষের লিঙ্গের উত্থান জনিত সমস্যা হতে পারে। স্পাইনাল কর্ডে আঘাত লাগা মানেই নার্ভাস সিস্টেমে আঘাত লাগা। আর নার্ভাস সিস্টেম কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলে বুঝতেই পারছেন কী হতে পারে। মোট কথা হলো- যেকোনো কারণে নার্ভ নার্ভের টিস্যু ডেমেজ হওয়া মানে লিঙ্গ ডেমেজ হওয়া।

তাছাড়া মাথার পেছনে কিংবা মস্তিষ্কে বড় কোনো আঘাত পেলে যেমন বাইক থেকে পড়ে গেলে বা অন্য কোনো অ্যাকসিডেন্টের কারণে এরকমটা হলে লিঙ্গ উত্থান সমস্যা দেখা দিতে পারে।

নেশা দ্রব্য সেবনঃ   কারো ধুমপান, অ্যালকোহল কিংবা অন্যান্য নেশা জাতীয় দ্রব্য গ্রহণের অভ্যাস থাকলে তার ইরেকটাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গ উত্থান জনিত সমস্যা হতে পারে। কারণ এগুলো রক্ত চলাচলে বিঘ্ন ঘটায়। তাছাড়া লাইফস্টাইল যদি স্বাভাবিক না থাকে যেমন ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া না করা, পরিমাণমতো ঘুম না হওয়া এগুলো কিন্তু অনেক বড় ধরনের ভূমিকা রাখে লিঙ্গের উত্থান সমস্যায়। আবার কারো যদি রক্তে কোলেস্টোরলের পরিমাণ বেশি থাকে সেটাও লিঙ্গ উত্থান জনিত সমস্যার কারণ হতে পারে।

ইরেক্টাইল ডিসফাংশন এর সঠিক ডায়াগনোসিসঃ

প্রথমবার এই ধরনের পেশেন্ট যখন আমাদের কাছে আসে আমরা কিছু প্রশ্নের মাধ্যমে তার লাইফ হিস্টোরি সম্পর্কে জেনে নিই। প্রশ্নগুলোর মাধ্যমে প্রপার ইনভেস্টিগেশন করে দেখি সমস্যাটি মানসিক নাকি শারীরিক কারণে হচ্ছে। জিজ্ঞাসা করি আপনার মধ্যে কোন প্রকার মানসিক চাপ, ডিপ্রেশন, হতাশা আছে কি না। ঘুমের মধ্যে লিঙ্গ দাড়ায় কিনা। আপনি ধূমপান বা অ্যালকোহল গ্রহণ করেন কিনা। পার্টনারের সাথে আপনার সম্পর্ক কেমন। আপনার পর্যাপ্ত ঘুম হয় কিনা। আপনার পেলভিক এরিয়ায় কোনো সার্জারি বা রেডিয়েশন থেরাপি কখনও হয়েছে কিনা। মেরুদন্ড বা মাথার কাছাকাছি কখনো কোনো আঘাত লেগেছিল কিনা। পেশেন্টকে খোলামেলা সবকিছু ডাক্তারের কাছে বলতে হয় যাতে করে তিনি রোগের কারণগুলো শনাক্ত করতে পারেন।

শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষাঃ

লিঙ্গ উত্থান জনিত সমস্যার কারণ খুঁজে বের করার জন্য কিছু শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে। যেমন- রোগীর লিঙ্গ এবং অন্ডকোষকে ফোকাস করে একটা টেস্ট করা হয়। রোগীর বয়স বিবেচনা করে হার্ট, পেরিফেরাল স্পন্দন এবং ব্লাড প্রেশার পরীক্ষা কর হয়। রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষার কথা বলা হয়। পারিবারিক ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে প্রোস্টেট পরীক্ষার নির্দেশ দিতে পারেন। এই প্ররীক্ষাগুলো মোটেও বেদনাদায়ক নয়। কিছু হরমোন টেস্ট, ডায়াবেটিস আছে কিনা সেই জন্য ব্লাড সুগার টেস্ট। এছাড়াও রক্তপ্রবাহ ঠিকমতো হচ্ছে কিনা চেক করার জন্য পেনাইল ডপলার স্ক্যানিং করা হয়।

ইরেক্টাইল ডিসফাংশন চিকিৎসা পদ্ধতিঃ

ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গ উত্থান সমস্যা অনেক ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে। কিছু  আছে মুখে খাওয়ার ঔষধ, কিছু থেরাপি, পেনাইল ইনজেকশন, পেনিস পাম্প।

প্রথমবার ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গ উত্থান সমস্যার রোগীরা যখন আমাদের চেম্বারে আসেন, সবার আগে আমরা খুজে বের করার চেষ্টা করি তার এই সমস্যাটি কি কারণে হচ্ছে।সেই জন্য রোগের হিস্টোরি এবং তার জীবন-বৃত্তান্ত শুনি। এরপর কিছু হরমোনের পরীক্ষা দিই, ডায়াবেটিস আছে কিনা চেক করি। লিঙ্গে ঠিকমতো রক্ত প্রবাহ হচ্ছে কিনা সেটা দেখার জন্য লিঙ্গের কালার ডপলার স্ক্যান করি। এইভাবে একটা প্রপার আসেসম্যান্ট করে তারপর চিকিৎসা স্টার্ট করি।

কারো যদি মানসিক কারণে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গ উত্থান সমস্যাটি হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আমরা তাকে কিছু এক্সারসাইজ এবং কাউন্সিলিং এর মাধ্যমে পেশেন্টের ভিতরকার উদ্বেগ, ভয়, সংশয় এগুলো দূর করার চেষ্টা করি।টেস্টেস্টোরেন হরমোন বৃদ্ধির জন্য বিশেষ কিছু খাবার গ্রহণে উৎসাহিত করি।

আর যদি কোনো রোগের কারণে যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ কিংবা ড্রাগের কারনে Erectile Dysfunction বা লিঙ্গ উত্থান সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে সবার আগে আমরা এগুলোর সমাধান করার চেষ্টা করি। এরপর Erectile Dysfunction সমস্যার প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র দিয়ে থাকি।প্রাথমিক অবস্থায় সিলডেনাফিল, টাডানাফিল, ভারডেনাফিল, এভানাফিল এই ধরনের ঔষধ দিয়ে থাকি। ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গ উত্থান সমস্যার জন্য অনেক কার্যকরী মেডিসিন এগুলো।এগুলো পেনিসের ইরেকশন হতে সাহায্য করে।তবে এই ধরনের ঔষধ সেবনের পূর্বে অবশ্যই অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

ইরেক্টাইল ডিসফাংশন এর ঔষধ কতদিন খেতে হয়ঃ

ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গ উত্থান সমস্যার ঔষধ কতদিন খেতে হবে সেটা আপনার চিকিৎসকই নির্ধারণ করে দিবেন।তবে আমরা যেটা করে থাকি ২ থেকে ৩ মাস খাওয়ার পর ধীরে ধীরে ঔষধের ডোজ কমিয়ে দিই। এরপর একটা পর্যায়ে গিয়ে বন্ধ করে দিই। আর কাকে কোন ঔষধ স্যুট করবে সেটাও ডাক্তারবাবু নির্ধারণ করে দিবেন। কিছু কিছু ঔষধ আছে শরীরের সাথে মানানসই নাও হতে পারে, যেমন মাথা ঘুরা, বমি বমি ভাব হওয়া, শরীরের মাংসপেশীতে ব্যথা অনুভব করা, বেক পেইন হওয়া।সেই জন্য কোন ঔষধ কিভাবে খেতে হবে তা অভিজ্ঞ ডাক্তারই ভাল বুঝেন।

কিছু কিছু রোগী আছে যাদেরকে দীর্ঘদিন পর্যন্ত ঔষধ খেতে হয়। সেক্ষেত্রে দীর্ঘদিন যদি কাউকে ঔষধ খেতে হয় তাহলে উনি কোন ঔষধটা খাবেন, কিভাবে খাবেন সেটা ডাক্তারবাবুই ঠিক করে দিবেন। আবার কিছু কিছু রোগীকে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গ উত্থান সমস্যার ঔষধ সাময়িক সময়ের জন্য দিতে হয় । সেক্ষেত্র আপনার চিকিৎসক 10 mg, 25 mg, 50 mg, 100 mg অর্থাৎ রোগের তীব্রতা অনুযায়ী নির্ধারণ করে দিবেন। তবে কোনো ঔষধ নিজে নিজে প্রেসক্রাইব করবেন না।এতে করে আপনার যৌন জীবন পুরোপুরি পঙ্গু হয়ে যেতে পারে।

ইরেক্টাইল ডিসফাংশন এর আধুনিক চিকিৎসা

বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশেও Erectile Dysfunction বা লিঙ্গ উত্থান সমস্যার ভাল চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কোনো ধরনের কাটা-ছেঁড়া ছাড়া এবং সম্পূর্ণ ব্যথাবিহীন শক ওয়েভ ও মিনিমাল ইনভেসিভ পি-শট বা PRP চিকিৎসার মাধ্যমে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গ উত্থান সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব।

১। শক ওয়েভ থেরাপিঃ

ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গ উত্থান সমস্যায় নতুন উদ্ভাবনী চিকিৎসা ব্যবস্থা হচ্ছে এক্সট্রাকর্পোরিয়াল শক ওয়েভ থেরাপি (ESWT)।শক ওয়েভ হচ্ছে এক ধরনের শ্রবণযোগ্য উচ্চ শক্তি শব্দ তরঙ্গ যা একটি ডিভাইসের মাধ্যমে পুরুষাঙ্গের বাহিরের দিকে প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। কোনোরকম সার্জারি ছাড়া , একদম ব্যথামুক্ত ও রক্তপাতহীন চিকিৎসা পদ্ধতি হচ্ছে এই শক ওয়েভ থেরাপি। 

শক ওয়েভ থেরাপি কিভাবে কাজ করেঃ একটি বিশেষ ধরনের ডিভাইসের মাধ্যমে পুরুষাঙ্গের বেইজ, সেফট এবং পেরোনিয়াল এরিয়ায় অভিঘাত তরঙ্গ দেওয়া হয়।যার ফলে পুরুষাঙ্গের পেশিগুলো স্টিমুলেইটেড হয়, সেই সাথে লিঙ্গে ব্লাড সার্কুলেশন স্টিমুলেইটেড হয়।ফলে লিঙ্গে নতুন নতুন রক্তনালী তৈরি হয়।এবং রক্তনালীগুলোতে রক্ত প্রবাহ ত্বরান্বিত হয় যা ইরেকশন বা লিঙ্গ উত্থানে সক্ষমতা বাড়ায়।সাধারণত একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সাহায্যে ৬ থেকে ১২ টি সেশনের মাধ্যমে এই থেরাপি দেওয়া হয়।

২। পি-শট থেরাপিঃ

ইনজেকশনের মাধ্যমে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গ উত্থান সমস্যার সমাধানের পদ্ধতিকে বলা হয় পি-শট বা প্লাজমা শট বা পিআরপি শট। অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে পি-শট কাদের দেওয়া হয় এবং কিভাবে দেওয়া হয়। অনেক পেশেন্টরাই আমাদের কাছে এসে কমপ্লেইন করে যে, সিলডেনাফিল টাডালাফিল  ভারডেনাফিল এই ধরনের ঔষধ খেয়েও ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গ উত্থান সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। ঠিক এরকম পরিস্থিতিতে আমরা ডাক্তাররা পি-শটের কথা ভাবি। 

কিভাবে পি-শট দেওয়া হয়ঃ আমরা প্রথমেই রোগীর কাছ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ রক্ত নিই। মানুষের রক্তে দুইটি উপাদান থাকে যেমন রক্ত কণিকা ও প্লাজমা। আমরা রক্তটাকে ল্যাবরেটরিতে নিয়ে গিয়ে প্লাজমাটাকে আলাদা করে একটা সিরিঞ্জে ভরে নিয়ে পেনিসের বিভিন্ন অংশে ইনজেক্ট করি। এরকম করে নির্দিষ্ট সময় পর পর ২টা বা ৩টা অথবা ৪টা ইনজেকশন দিতে হয়। আপনারা জেনে অবাক হবেন যে এটা ম্যাজিকের মত চমৎকার কাজ করে।

৩। ভ্যাকুয়াম ইরেকশন ডিভাইস: 

এটি একটি বায়ুশুন্য  প্লাস্টিকের টিউব যার এক প্রান্ত দিয়ে পেনিস ঢুকানো হয়। টিউবের অন্য প্রান্ত দিয়ে পাম্পারের সাহায্যে পাম্প দেওয়া হয়। এটি পেনিসের টিস্যুর চারপাশে বাতাসের চাপ তৈরি করে, যার ফলে লিঙ্গের ইরেকশন হতে থাকে। তারপর একটি ইলাস্টিক রিং লিঙ্গের গোড়ায় স্খলিত হয়। এটি ৩০ মিনিট পর্যন্ত লিঙ্গে রক্ত ​​ধরে রাখে (এবং এটি শক্ত রাখে)। যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে, ১০০ জনের মধ্যে ৭৫ জন পুরুষ ভ্যাকুয়াম ইরেকশন ডিভাইস ব্যবহার করে একটি কার্যকরী ইরেকশন পেতে পারে।এই হচ্ছে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গ উত্থান সমস্যা সম্পর্কিত আলোচনা। কেউ এই ধরনের সমস্যায় পড়লে মোটেও বিচলিত হবেন না।মনকে শক্ত রাখুন। স্বাভাবিক জীবনযাপন করুন।

Previous Post